,

ফরিদপুরে সাংবাদিক পেটানোর ঘটনায় মামলা

জেলা প্রতিনিধি, ফরিদপুর: ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় স্থানীয় সাংবাদিক মুজাহিদুল ইসলাম নাঈমকে পিটিয়ে আহতের ঘটনায় মামলা হয়েছে।

হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মঙ্গলবার সকালে আলফাডাঙ্গা থানায় মামলাটি হয়।

আলফাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ওয়াহিদুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, ‘মামলার বাদী সাংবাদিক মুজাহিদুল ইসলাম নিজেই। তার ওপর হামলার ঘটনায় দুইজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত পরিচয় ৪/৫ জনকে আসামি করে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা হয়েছে।’

আসামিরা হলেন আলফাডাঙ্গার পৌর মেয়র সাইফুর রহমান সাইফারের ছোট ভাই জাপান মোল্যা ও রাজধানী পরিবহন কাউন্টারের কর্মচারি পারুল বেগম।

মারধরের ঘটনায় সোমবার আটক পারুলকে মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওসি।

হামলার শিকার মুজাহিদ ঢাকা থেকে প্রকাশিত ‘দৈনিক ঢাকা টাইমস’ পত্রিকার নিজস্ব প্রতিবেদক ও আলফাডাঙ্গা প্রেস ক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক।

সোমবার বেলা ৩টার দিকে উপজেলা বাস স্ট্যান্ডে তাকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকরা তাকে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। বিকেল ৫টার দিকে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়।

অভিযোগ, আলফাডাঙ্গার পৌর মেয়র সাইফুর রহমান সাইফারের ছোট ভাই জাপান মোল্যা ও তার অনুসারীরা তার ওপর হামলা চালান।

মুজাহিদ বলেন, ‘আলফাডাঙ্গা পৌরসভার মেয়র সাইফুর রহমান সাইফারের ভাই জাপান মোল্যা পাঁচ-ছয়জন সহযোগী নিয়ে হঠাৎ করে আমার ওপর হামলা চালান। তারা লোহার রড, স্টাম্প ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে আমাকে বেধড়ক মারধর করেন। স্থানীয়রা আমাকে রক্ষায় এগিয়ে এলে তাদেরও পিটিয়ে আহত করে হামলাকারীরা।’

মুজাহিদ এখন আশঙ্কামুক্ত জানিয়ে চিকিৎসকের বরাতে তার ভাই মিয়া রাকিবুল বলেন, ‘সোমবার রাতেই উন্নত চিকিৎসার জন্য ভাইকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার সারা শরীরে আঘাতের ব্যথা রয়েছে। বাম হাতের কনুইয়ের নিচে হাড়ে ফাটল রয়েছে। আর মাথায় আঘাতের কারণে সিটি স্ক্যান করা হয়েছে।

‘এখন তিনি স্বাভাবিক কথা বলছেন। ডাক্তার বলছেন ভয়ের কিছু নাই, এখন আশঙ্কামুক্ত। ভাইয়ের চিকিৎসা নিয়ে ব্যস্ত থাকায় মামলা করতে দেরি হয়।’

রাকিবুল জানান, মুজাহিদ ঢাকায় চিকিৎসাধীন থাকলেও সেখান থেকে তার সইসহ কাগজপত্র নিয়ে এসে মামলাটি হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, আলফাডাঙ্গা বাস স্ট্যান্ডে রাজধানী পরিবহনের কাউন্টারে টিকিট কিনতে যান রমিজ নামের এক যুবক। তিনি ঢাকার একটি টিকিটের দাম পরিশোধ করে বাসে ওঠেন। বাস ছাড়ার আগ মুহূর্তে ‘ক্যাশ কাউন্টার’ থেকে বলা হয় রমিজ টিকিটের টাকা দেননি। তাই তাকে ঢাকায় যেতে দেয়া হবে না।

বিষয়টি জানিয়ে মুজাহিদের সহযোগিতা চান রমিজ।

ঘটনাস্থলে এসে বিষয়টির মীমাংসা করার কথা বলতেই সাংবাদিক মুজাহিদের ওপর চড়াও হন কাউন্টারের ম্যানেজার জাপান ও তার সহযোগীরা। জাপান স্থানীয় পৌর মেয়র সাইফুর রহমান সাইফারের ছোট ভাই।

মামলার প্রধান আসামি জাপানকে আটকের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন ওসি ওয়াহিদুজ্জামান।

এই বিভাগের আরও খবর